<< ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে প্লুটোর বায়ুমণ্ডল

২০০৬ সালে গ্রহের তালিকা থেকে বাদ পড়ে প্লুটো। গ্রহ না হলেও এটিকে ঘিরে বিজ্ঞানীদের কৌতূহলে কোনো ঘাটতি দেখা যায়নি। সম্প্রতি প্লুটোকে নিয়ে নতুন তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের ভাষ্য, বামন গ্রহ হিসেবে পরিচিত প্লুটোর চারদিকে গ্যাসের প্রলেপ ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। সূর্যের থেকে দূরে চলে যাওয়ায় গ্যাসগুলো ফের বরফে পরিণত হচ্ছে। নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সায়েন্স এলার্ট

বামন গ্রহ প্লুটোর বায়ুমণ্ডলের বেশির ভাগ নাইট্রোজেন দিয়ে গঠিত। এ ছাড়া রয়েছে মিথেন ও কার্বন মনোক্সাইড। ধারণা করা হচ্ছে, গ্রহটির পৃষ্ঠতলের তাপমাত্রা আস্তে আস্তে কমে যাওয়ার কারণে নাইট্রোজেন ফের হিমায়িত হচ্ছে। এতে প্লুটোর চারদিকে ঘিরে থাকা বায়ুমণ্ডলও বিলীন হয়ে পড়ছে।

অকাল্টেশন নামে পরিচিত মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এ ধরনের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে প্লুটোতে কী হচ্ছে তা দেখতে টেলিস্কোপে দূরবর্তী কোনো নক্ষত্রকে ব্যাকলাইট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রায়ই এ পদ্ধতির শরণাপন্ন হয়।

টেক্সাসের সাউথইস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গ্রহবিজ্ঞানী ইলিয়ট ইয়ং বলেন, ‘১৯৮৮ সাল থেকে প্লুটোর বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তন দেখতে বিজ্ঞানীরা অকাল্টেশন পদ্ধতি ব্যবহার করে আসছেন।’

তিনি বলেন, ‘প্রতি দশকে প্লুটোর বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব দ্বিগুণ হয়। তবে আমাদের ২০১৮ সালের পর্যবেক্ষণ বলছে, ২০১৫ সাল থেকে গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে এ ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়নি।’

প্লুটোর বায়ুমণ্ডল পৃষ্ঠতলের বাষ্পযুক্ত বরফে সৃষ্ট। সামান্য তাপমাত্রার হেরফেরে বায়ুমণ্ডলের ঘনত্বের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটে। সবচেয়ে পরিচিত প্লুটোর নাইট্রোজেন হিমবাহের নাম স্পুৎনিক প্ল্যানিশিয়া।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, সূর্য ও প্লুটোর মধ্যকার দূরত্ব ধীরে ধীরে বাড়ছে। এতে গ্রহটিতে সূর্যের আলো ও তাপমাত্রা আগের চেয়ে কম পৌঁছাচ্ছে। ২০১৫ সালে প্রথম প্লুটোর বায়ুমণ্ডলে ঘনত্বের পরিবর্তন দেখা যায়।

সাউথইস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের আরেক গ্রহবিজ্ঞানী লেসলি ইয়ং বলেন, ‘সূর্য যেভাবে সমুদ্র সৈকতের বালু উত্তপ্ত করে, তার সঙ্গে প্লুটোর বায়মণ্ডলে এ পরিবর্তনের তুলনা করা যায়।

‘সূর্যের আলোর প্রখরতা দুপুরে সবচেয়ে বেশি থাকে। সৈকতের বালু ওই সময় সূর্যের তাপ শুষে নেয়। ফলে দুপুরের শেষ সময়ে সমুদ্রসৈকত সবচেয়ে বেশি গরম থাকে।’

শেয়ার করলে অনুপ্রাণিত হবো...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *