<< ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমলো ৯০ পয়সা

ডলারের বিপরীতে টাকার মান আবারও কমানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকসমূহে ডলার বিক্রি করেছে ৮৯ টাকা ৯০ পয়সায়। আগে যা ছিল ৮৯ টাকা। ফলে এক দিনেই ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমলো ৯০ পয়সা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ওপেন মার্কেট যেভাবে ডিমান্ড করেছে সেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই দর নির্ধারণ করা হয়েছে। যারা দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন তারা প্রতি ডলারে ৮৯ টাকায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। তাই প্রবাসীদের খুশি করার জন্য প্রকৃত দরের ওপর মূল্যায়ন করে ডলারের দাম ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাজারের পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার সরবরাহ করছে জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ব্যাংকগু‌লোর কাছে ৬ বিলিয়নের বেশি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। যখনই প্রয়োজন হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার সরবরাহ করছে।

২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।

২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। ৩ আগস্ট থেকে দুই-এক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতাে ডলারের দাম ৮৫ টাকা ছাড়ায়। এ বছরের ৯ জানুয়ারিতে এটি বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছে। এরপর ২২ মার্চ পর্যন্ত এ দরেই স্থির ছিল। পরে গত ২৩ মার্চ আন্তঃব্যাংকে আরও ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়ায়। ২৭ এপ্রিল আ‌রও ২৫ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। ১০ মে বাড়ে আরও ২৫ পয়সা। ১৬ মে বাড়ে ৮০ পয়সা। গত ২৩ মে বাড়ে ৪০ পয়সা। ফলে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম গিয়ে ঠেকে ৮৭ টাকা ৯০ পয়সায়।

এর পর গত ২৯ মে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপরও বাজার স্থিতিশীল হয়নি। পরে সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকারস, বাংলাদেশের (এবিবি) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২৯ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলার ৮৯ টাকা বেঁধে দেয়। আর আমদানিকারকদের কাছে বিক্রির জন্য বিসি সেলিং রেট নির্ধারণ করা হয় ৮৯ টাকা ১৫ পয়সা। যদিও ব্যাংকগুলো আন্তব্যাংক লেনদেনে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৯ টাকা ৮০ পয়সার প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু তাতেও বাজার স্থিতিশীল না হওয়ায় আজ ২ জুন আরও ৯০ পয়সা বাড়িয়ে ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ মূল্য। অর্থাৎ গত ১০ মাসের ব্যবধানে প্রতি ডলারে দর বেড়েছে ৫ টাকা ১০ পয়সা।

শেয়ার করলে অনুপ্রাণিত হবো...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *