<< যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছে রাশিয়া ও চীন

ইউক্রেন ও তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) সাম্প্রতিক তৎপরতা ঠেকাতে জোট বেঁধেছে রাশিয়া ও চীন। শুক্রবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গঠন করেন এই ঐক্যজোট।

পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে, তাতে রাশিয়ার পক্ষে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। অন্যদিকে, তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের যে বৈরিতা শুরু হয়েছে- তাতে চীনের পক্ষে অবস্থান স্পষ্ট করেছে রাশিয়া।

চলতি বছরের শীতকালীন অলিম্পিকের আসর বসছে চীনে। অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজধানী বেইজিং গিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হয় তার। সে বৈঠকেই ‘স্পর্শকাতর’ দু্ই ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছান দুই দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও রাশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেন কয়েক বছর আগে ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।

রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেনকে সদস্য করার মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপে তৎপরতা বাড়াতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো, যা ১৯৯০ সালের চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘণ। ন্যাটো অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

অন্যদিকে, স্বশাসিত দ্বীপ ভূখণ্ড তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীকে সমর্থন ও অস্ত্র সহযোগিতা দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চরম তিক্ততা চলছে চীনের। বেইজিংয়ের অভিযোগ- তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীকে সমর্থনের মাধ্যমে ওয়াশিংটন মূলত চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিতভাবে নাক গলাচ্ছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের বৈরী পক্ষ হিসেবে ইতোমধ্যে চিহ্নিত হওয়া দুই রাষ্ট্রনেতার শুক্রবারের বৈঠক সফল হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন। ক্রেমলিনের বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলা হয়, ‘উষ্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে দুই দেশের রাষ্ট্রনেতার বৈঠক হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রেই পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন তারা।’

রাশিয়া ও চীন দেশের সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র তার নেতৃত্বাধীন জোট যেভাবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সেনা ও পারমানবিক অস্ত্রের মজুত বাড়াচ্ছে তাতে পুনরায় শীতল যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্বকে এই সম্ভাব্য বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে তাইওয়ান ও ইউক্রেনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলোতে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হয়েছে চীন ও রাশিয়া।’

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স

শেয়ার করলে অনুপ্রাণিত হবো...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *