<< মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী-সামরিক বাহিনী ব্যাপক সংঘর্ষ

মিয়ানমারের স্যাগাইং অঞ্চলে জান্তাবিরোধীদের সঙ্গে তীব্র সংঘাতের পর দেশটির সামরিক বাহিনী কিছু এলাকায় বিমান হামলা শুরু করেছে। স্থানীয় গণমাধ্যম এবং মিলিশিয়া সদস্যরা বলছে, সংঘাতের কারণে স্যাগাইংয়ের কিছু জেলায় ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

সামরিক বাহিনী নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসায় গত ১ ফেব্রুয়ারি এক দশকের অস্থায়ী গণতান্ত্রিক যাত্রার অবসান ঘটে মিয়ানমারে। দেশটির সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় দেশে এবং বিদেশে ব্যাপক ক্ষোভ এবং নিন্দার ঝড় শুরু হয়। মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামীরা সামরিক শাসনের বিরোধিতায় পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) নামে একটি প্রতিরোধ বাহিনী গড়ে তুলেছেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডিভিবি বলেছে, উত্তর-পশ্চিম মিয়ানমারের স্যাগাইংয়ের পিনলেবু এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানের সময় বিমান হামলা হয়েছে। শনিবার রাতে ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আগে বিমান হামলা এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

পিনলেবু পিডিএফের একজন সদস্য ওই এলাকার বাইরে থেকে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বিমান হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে হামলায় পিডিএফের কোনও হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে পিডিএফের ওই সদস্য বলেন, ‌ইন্টারনেট এবং ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্নের কারণে আমরা সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না। বিমান হামলার দাবির বিষয়ে রয়টার্স স্বতন্ত্রভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি। একই সঙ্গে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলেও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্রের সাড়া পায়নি।

জান্তার বিরোধী মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সংসদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত ছায়া প্রশাসন জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) বলেছে, সংঘাতে একটি রকেট চালিত গ্রেনেড, ক্ষুদে আগ্নেয়াস্ত্র এবং গোলাসহ একটি অস্ত্র ভাণ্ডার জব্দ করা হয়েছে। লড়াইয়ে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর ২৫ জনেরও বেশি সদস্যের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছে এনইউজি।

সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গত ৭ সেপ্টেম্বর এনইউজি বিদ্রোহ ঘোষণার পর স্যাগাইংয়ের মতো কিছু এলাকায় রক্তপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা এবং সরকারের সম্পদকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে গণতন্ত্রকামীদের পিপলস ডিফেন্স ফোর্স।

এর আগে, সংঘাতের সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বিক্ষোভ দমনে শহরগুলোতে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় দেশটির জান্তা সরকার। দেশটির আরেক সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাও পিডিএফের সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে বলেছে, বৃহস্পতিবার থেকে এখন পর্যন্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনী চিন রাজ্য এবং ম্যাগওয়ে অঞ্চলের সংঘাত-কবলিত ১১টি জেলায় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।

গত সপ্তাহে চিন রাজ্যের থ্যান্টলাং শহরে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে পিডিএফের সংঘাতের পর সেখানকার হাজার হাজার বাসিন্দার ভারতমুখী ঢল শুরু হয়। ওই সংঘাতে থ্যান্টলাংয়ের খ্রিস্টান একজন যাজকের প্রাণহানি ঘটে। পরে মিয়ানমারের সেনা-নিয়ন্ত্রিত কোম্পানি মাইটেলের বেশ কিছু মোবাইল টাওয়ার ধ্বংসের দাবি করে সেখানকার কিছু মিলিশিয়া গোষ্ঠী।

সূত্র: রয়টার্স।

শেয়ার করলে অনুপ্রাণিত হবো...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *